15 Nov 2024, 06:30 am

ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো ৭৪৭ পুলিশ চিহ্নিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র থেকে গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যদের তালিকা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশের অন্তত ৭৪৭ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কনস্টেবল থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার এসব কর্মকর্তা গত ১৮ থেকে ২১ জুলাই গুলি করেছেন।

শনিবার (২ নভেম্বর) পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, অতি বলপ্রয়োগকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা অনেকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তদন্ত করছে।

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণকারী হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭৫৪ জন সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্য হলেন ৭৪৭ জন। যাদের মধ্যে কনস্টেবল ৪৬৭ জন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ১০৬, উপপরিদর্শক (এসআই) ১৫৭, পরিদর্শক দুজন এবং এএসপি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা রয়েছেন। বাকি ১৪ জন পুলিশের নায়েব, সুবেদার ও চালক।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সূত্র বলছে, আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করার ক্ষেত্রে শটগান, পিস্তল ও চায়নিজ রাইফেলের ব্যবহার বেশি হয়েছে। কোথাও কোথাও এসএমজি (সাব-মেশিনগান) ও এলএমজির (লাইট মেশিনগান) মতো অস্ত্রও ব্যবহৃত হয়েছে। এসব অস্ত্র বাংলাদেশ পুলিশ ব্যবহার করে।

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অভিযোগে ইতিমধ্যে পুলিশের দুই কর্মকর্তা ডিএমপির মিরপুর বিভাগের সাবেক উপকমিশনার জসীম উদ্দিন মোল্লা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর কারাগারে পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

গত ১৮ থেকে ২১ জুলাই ওই চার দিনে হতাহতের ঘটনায় পুলিশের করা মামলাগুলোর এজাহার থেকেই গুলি-বর্ষণকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা গুলি করার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানেননি। গুলি করার নির্দেশদাতা বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সূত্র বলেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আহ্বান করেছিল। ১৮ থেকে ২১ জুলাই—এ চার দিনে দেশে সবচেয়ে বেশি গুলি চলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। পুলিশের ৩৫৭ সদস্য এ সময় প্রায় ৮ হাজার প্রাণঘাতী গুলি করেন। এতে অনেক বিক্ষোভকারী নিহত এবং কয়েক শ আহত হয়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ১৮ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অন্তত ১১৫টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে ১০০টির এজাহার পর্যালোচনা করে ‘লয়ার ফর এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নামে আইনজীবীদের একটি সংগঠন।

সেই পর্যালোচনার একটি প্রতিবেদন সংগঠনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকে দিয়েছে। সেখানেই ওই চার দিনে প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তালিকা করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশ যে ধরনের গুলি চালিয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পুলিশ প্রবিধানের ১৫৩ ধারা অনুযায়ী, নিরস্ত্র জনতার ওপর গুলি চালানোর অনুমতি নেই। পুলিশ কোনোভাবেই প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে নিরস্ত্র জনতার ওপর গুলি চালাতে পারে না। পুলিশ যে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2800
  • Total Visits: 1244619
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১২ই জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৬:৩০

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018